
চিত্রা মেইল ডেস্ক রিপোর্ট:
নড়াইলের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা এনামুল কবির টুকুর মুক্তিযোদ্ধার গেজেট (গেজেট নাম্বার ২৬৪) বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়। গত ২৬ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ৪৮.০০.০০০০.০০০.০০৪.০৭,০০০৮,২৫.১৫৭৮- স্মারক নম্বরে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব হরিদাস ঠাকুরের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে টুকুর গেজেট বাতিল করা হয়েছে।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পাঁচগ্রাম ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকীর ছেলে টুকু বর্তমানে নড়াইল শহরের কুড়িগ্রামে এলাকায় বসবাস করেন।২৮ অক্টোবর রাতে ফেসবুকে বিষয়টি ভাইরাল হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা তবিবর রহমান জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছি নড়াইলের যত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে তাদের গেজেট বাতিল করা হোক। অবশেষে টুকুসহ নড়াইলে চারজনের গেজেট বাতিল হয়েছে।মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে সরকারকে অভিনন্দন জানাই। আমরা পরবর্তীতে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে বাকি ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট বাতিল করতে চেষ্টা করব। এ বিষয়ে নড়াইলের সন্তান আমেরিকান প্রবাসী নেওয়াজ মাহমুদ ভিকু বলেন,আমি দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা এনামুল কবির টুকুর বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছি।পাঁচ বছর পরে সাফল্য এসেছে। শুধু টুকু না সকল ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট বাতিল করতে সংগ্রাম চালিয়ে যাব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুশীল সমাজের একাধিক ব্যক্তি জানান এনামুল কবির টুকু সাংবাদিকতাকে কাজে লাগিয়ে মিথ্যা তথ্য ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে মুক্তিযোদ্ধা বনে যান। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকতার সাইনবোর্ড লাগিয়ে এবং নড়াইল প্রেসক্লাবের কর্তাব্যক্তি পরিচয় দিয়ে (সভাপতি ও সেক্রেটারি) বিভিন্ন অফিস গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে মাসোহারা আদায় করতেন। নিজে (টুকু) সামান্য লেখাপড়া জানলেও জেলা প্রশাসকের মিটিংয়ে গিয়ে বিসিএস কর্মকর্তাদের হুমকি ধামকি দিতেন।নড়াইল প্রেসক্লাবের অডিটে টুকুর ৮০ হাজার টাকা চুরির বিষয় ধরা পড়লে সেটা ফেরত দিতে বাধ্য হন।তারপরও প্রেসক্লাবে বহাল তবিয়তে থেকে তার রামরাজত্ব চালাতে থাকেন। টুকুর গেজেট বাতিল হওয়ার পর সাংবাদিকরা জানান নড়াইল প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার সদস্য পদ থাকার কথা না।
মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিলের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে এনামুল কবির টুকু বলেন আমি আদালতে যাব। জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান বলেন এনামুল কবির টুকুর মুক্তিযোদ্ধার বিষয়ে অভিযোগ হওয়ায় যাচাই-বাছাই করে তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠানোর পর উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষ তার মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
